আল হারেসা ইবন সুরাকা মদীনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের নাজ্জার শাখার সন্তান। পিতা সুরাকা বিন হারেস এবং মাতা রাবী বিনতু নাদার। তাঁর ডাক নাম উম্মুল হারেসা। মা রাবী ছিরেন একজন উঁচুস্তরের সাহাবী এবং সাহাবী রাসূলুল্লাহর (সা) খাদেম আনাস ইবন মালিকের আপন ফুফু।
রাসূলুল্লাহর (সা) মদীনায় আগমনের পূর্বেই পিতার মৃত্যু হয়। মা জীবিত ছিলেন এবং ইসলাম গ্রহণ করে সাহাবিয়্যাতের মর্যাদা লাভের গৌরব অর্জন করেন। মায়ের সাথে ছেলেও ইসলাম গ্রহণ করেন। রাসূল (সা) আস-সায়িত ইবন উসমান ইবন মাজ’উনের (রা) সাথে তাঁর দ্বীনে ভ্রাতৃ সম্পর্ক কায়েম করেছেন।
বদর যুদ্ধে যোগদান করেন। বদরে যাত্রার নির্দেশ লাভের পর তিনিই সর্বপ্রথম ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করে চলতে শুরু করেন। রাসূল (স) তাঁকে পর্যাবেক্ষক ও তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে নিজের সংগে রাখেন। তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তিনি যখন একটি ঝরনয় পানি পান করছিলেন তখন হিববান ইবন আরাফাত নিক্ষিপ্ত একট তীরের আঘাতে শাহাদাত বণ করেন। বর্ণিত আছে, আনসারদের মধ্যে সর্বপ্রথম শহীদ তিনি। তবে কোন কোন বর্ণনায় এসেছে, তিনি উহুদ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন। পূর্বোক্ত র্বণনাটি সর্বাধিক প্রসিদ্ধ।
রাসূলুল্লাহর (সা) বদর থেকে মদীনায় ফিরে এলেন। আল হারেসার মা ছুটে এসে বললেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল হারেসাকে আমি কতখানি ভালোবাসি তা আপনি জানে। যদি সে জান্নাতের অধিকারী হয়ে থাকে তাহলে তো সবর করলাম। অন্যথায় আপনি দেখবেন আমি কি করি। রাসূলুল্লাহর (সা) বললেন: এসব তুমি বলছো কি? জান্নাতের সংখ্যা তো একটি বা দু’টি নয়। জান্নাত অনেক। আল হারেসা সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাত আল ফিরদাউসের অধিকারী হয়েছে। এই খোশখবর শুনে মা রাবী’ আনন্দে আ্মহারা হয়ে যান। মৃদু হাসতে হাসতে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগেন: নাজ, নাজ ইয়া আল হারেসা-সাবাশ, সাবাশ, ওহে আল-হারেসা।
আল হারেসা ছিলেন দারুণ মাতৃভক্ত। উসুদুল গাবা’ গ্রনথকার লিখেছেন! তিনি ছিলেন মায়ের ভীষণ অনুগত ও বাধ্য।
– মুহাম্মাদ আবদুল মা’বুদ (আসহাবে রাসূলের জীবনকথা)


