Tuesday, November 4, 2025
Homeপ্রশ্ন ও উত্তরবজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকের সময় পঠিতব্য দোয়া

বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকের সময় পঠিতব্য দোয়া

বজ্রপাত হচ্ছে আসমানি দুর্যোগ। মানুষকে অন্যায় থেকে বিরত রাখার একটি সতর্কবার্তাও বটে। এ বজ্রপাত আল্লাহ তাআলা শক্তিমত্তার এক মহা নিদর্শন। তিনি ইচ্ছা করলেই যে কাউকে এ বজ্রপাতের মাধ্যমে শাস্তি দিতে পারেন। আবার মানুষও এ বজ্রপাত থেকে সর্বোত্তম শিক্ষা নিতে পারে।
আল্লাহ তাআলা কুরআনের একটি সুরা নাম রেখেছেন রাদ। যার অর্থও বজ্রপাত। বজ্রপাত নামে নাজিল হওয়া সুরায় মহান আল্লাহ সে কথাই ঘোষণা করেছেন-
هُوَ الَّذِي يُرِيكُمُ الْبَرْقَ خَوْفًا وَطَمَعًا وَيُنْشِئُ السَّحَابَ الثِّقَالَ – وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلاَئِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ وَيُرْسِلُ الصَّوَاعِقَ فَيُصِيبُ بِهَا مَن يَشَاء وَهُمْ يُجَادِلُونَ فِي اللّهِ وَهُوَ شَدِيدُ الْمِحَالِ
“তিনিই তোমাদের বিদ্যুৎ দেখান ভয়ের জন্য এবং আশার জন্য এবং উপেক্ষিত করেন ঘন মেঘমালা। তাঁর (তাহমিদ) প্রশংসা কর। বজ্র এবং ফেরেশতারাও তার ভয়ে (তাসবিহ রত)। তিনি বজ্রপাত করেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা তিনি তা (বজ্রপাত) দ্বারা আঘাত করেন। এরপরও তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে অথচ তিনি মহাশক্তিশালী।” [সুরা রাদ : আয়াত ১২-১৩]
নিম্নে বজ্রপাত এবং বিদ্যুৎ চমকানো প্রসঙ্গে কী দোয়া পড়তে হয় সে বিষয়ে আলেমদের দুটি ফতোয়া উল্লেখ করার মাধ্যমে আলোচনা করা হলো:
✅ শাইখ বিন বায রাহ.:
প্রশ্ন: শ্রোতা (ম. সিহলি) একাধিক প্রশ্ন পাঠিয়েছেন। তার একটি প্রশ্ন হলো—বজ্রপাতের শব্দ শোনা বা বিদ্যুৎ চমক দেখার সময় শরিয়তসম্মত কোনো দোয়া আছে কি না? জাযাকাল্লাহু খাইরান (আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন)
উত্তর:
কিছু হাদিসে এসেছে যে, বজ্রপাতের শব্দ শোনার সময় বলা হয়:
سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
উচ্চারণ: “সুবহানাল্লাযী ইউসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি ওয়াল মালায়িকাতু মিন খীফাতিহি।”
অর্থ:
“আমি তার পবিত্রতা বর্ণনা করি যার ভয়ে বজ্রধ্বনি ও ফেরেশতাবর্গ তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।” [সূরা রাদ: ১৩]
এটি আব্দুল্লাহ ইবনুজ্ জুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু বজ্রপাত শুনলে বলতেন।
কিন্তু বিদ্যুৎ চমক (আলো) দেখার সময় বিশেষ কোনো দোয়া পড়ার ব্যাপারে আমার জানা নেই। আমি সুন্নাহ থেকে এ বিষয়ে কিছু পাইনি।
উপস্থাপক:
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান। ”আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন।”
✅ ইসলাম ওয়েব:
প্রশ্ন: বজ্রপাতের শব্দ শোনার পর কোন দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর:
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর পরিবারবর্গ ও সাহাবিদের ওপর।
আব্দুল্লাহ ইবনুজ্ জুবাইর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে সহিহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বজ্রপাতের শব্দ শুনলে কথাবার্তা বন্ধ করে দিতেন এবং বলতেন:
سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ
উচ্চারণ: “সুবহানাল্লাযী ইউসাব্বিহুর রা’দু বিহামদিহি ওয়াল মালায়িকাতু মিন খীফাতিহি।”
অর্থ:
“আমি তার পবিত্রতা বর্ণনা করি যার ভয়ে বজ্রধ্বনি ও ফেরেশতাবর্গ তাঁর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে।” [সূরা রাদ: ১৩]
এরপর তিনি বলতেন: “নিশ্চয়ই এটি পৃথিবীর জন্য কঠিন শাস্তির সতর্কবার্তা।”
[ইমাম বুাখারির আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস: ৭২৩, সহিহ সনদে বর্ণিত]
তাই কেউ যদি এই সাহাবির অনুসরণে এটি পড়ে তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আমরা এমন কোনো সহিহ হাদিস পাইনি যেখানে এটি সরাসরি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত।
আল্লাহু আলাম-আল্লাহই সর্বজ্ঞ।
🛑 বজ্রপাত থেকে রক্ষার নিম্নোক্ত দোয়াটা জইফ (দুর্বল):
اللَّهُمَّ لاَ تَقْتُلْنَا بِغَضَبِكَ وَلاَ تُهْلِكْنَا بِعَذَابِكَ وَعَافِنَا قَبْلَ ذَلِكَ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লা-তাক্বতুলনা বিগাযাবিকা, ওয়া লা-তুহলিকনা বিআযা-বিকা; ওয়া আ-ফিনা-ক্বাবলা যা-লিকা।’
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি আমাকে আপনার গজব দিয়ে হত্যা করে দেবেন না এবং আপনার আজাব দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এসবের আগেই আপনি আমাকে পরিত্রাণ দিন।’ [তিরমিজি, হা/৩৪৫০]
এ হাদিসে বলা হয়েছে, কেউ যদি বজ্রপাতের সময় এ দুআ পড়ে তাহলে সে রক্ষা পাবে। কিন্তু হাদিসটি সহিহ নয়।
[দেখুন: যায়ীফাহ-আলবানি , হা/১০৪২। আজকার-নওয়াবি, হা/২৩৪। তাখরিজুল মুসনাদ-শুয়াইব আরনাবুত, হা/ ৫৭৬৩]
আল্লাহু আলাম।
– আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments